দুর্গাপুজোকে মানবতার অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিল ইউনেস্কো, তথা বৃহত্তর পৃথিবী, যাঁরা মানবসভ্যতায় বিশ্বাসী। বাংলার তথা বিশ্বজনীন দুর্গোৎসব আজ আর শুধু হপ্তাখানেকের পুজো উদযাপন বা মিলনোৎসবে থেমে রইল না, পৃথিবীর নবীনতম আশ্চর্য্যের ও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছুঁয়ে ফেলল। আমাদের সাধের কলকাতা শহর, যা কিনা এই দুর্গোৎসবের আদি পীঠস্থান বলে প্রতিষ্ঠিত, আজ এই বিরল স্বীকৃতির রাজধানীর সম্মানে ভূষিত হল। আর কলকাতার সাবেক সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের পুজো মানেই ম্যাডক্স স্কোয়ারের নাম বিশ্বের দুর্গাপুজোর মানচিত্রে স্বর্ণাক্ষরে ছাপা হয়ে আছে আজ প্রায় সাড়ে আট দশক জুড়ে। চোখ জুড়োনো ডাকের সাজের একচালা প্রতিমা, সুসজ্জিত সুবিশাল ঠাকুরদালান, ঢাকের বাদ্যি আর পুষ্পাঞ্জলি-সন্ধ্যারতির মনোমুগ্ধকর আবহ, প্রসাদ বিতরণের ঢালাও আয়োজন এবং সর্বোপরি বাঙালি-অবাঙালি নির্বিশেষে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ইত্যাদি মিলে এমন অজস্র পটচিত্রের সৃষ্টি হয় এই পুজোপ্রাঙ্গণে, যে আট থেকে আশি সবাই শারদোৎসবের বাঁধভাঙা আনন্দে একসাথে ভেসে যেতে পারেন, নির্দ্বিধায়। এমনই বাংলার সুপ্রসিদ্ধ তথা শতাব্দী প্রাচীন পটচিত্রে সেজে উঠতে চলেছে ম্যাডক্স স্কোয়ারের এবারের মণ্ডপ তথা পুজোপ্রাঙ্গণ, যা কিনা এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতির আবহে অত্যন্ত মানানসই এক পদক্ষেপ। শুধু এই স্বীকৃতির বছরেই নয়, এই মহান উৎসবের ঐতিহ্য এবং সাবেকিয়ানা সযত্নে আগলে রেখে আগামীর দিকে এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর ম্যাডক্স স্কোয়ারের প্রতিটি প্রজন্মের প্রতিনিধিরা। এই দায়িত্বের অর্থ এবং উপলদ্ধি অনির্বচনীয়, নিঃশব্দে ব্যাটনগুলো হাতে হাতে এগিয়ে চলেছে কেবল, যুগযুগ ধরে…
ভাবনায় — কল্যাণ ঢাল
কথায় – চন্দন মুখার্জী